সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে একটি তিন তলা বাড়ির নীচতলায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছে। দগ্ধদের মধ্যে তিনজনই শিশু। তাদেরকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(৪ আগষ্ট) ভোর পৌনে ছয়টার দিকে সোনারগাঁ উপজেলাে কাঁচপুর বেসিক মধ্যপাড়া এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন-সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের মানব চৌধুরী (৪০), তার স্ত্রী বাচা চৌধুরীসহ (৩৮), ৩ মেয়ে মুন্নি (১৪), তিন্নি (১২) ও ময়ূরী (৬)।
স্থানীয়রা জানান, বাড়িটির নিচ তলায় ভাড়া থাকে ওই পরিবার। ভোরে রান্নার জন্য চুলা জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে একটি বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। পরে তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন গিয়ে দেখে আগুন নেভায়। এরপর দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ভবনের তিন তলায় বসবাসরত বাড়িটির মালিক ফরিদ মিয়া জানান, বিকট শব্দে তাদের ঘুম ভাঙলে নিচে গিয়ে কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের ঘরের খাটের এক অংশ ও জামা কাপড় পুড়েছে। তবে স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলায় আগুন ছড়াতে পারেনি।
আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো প্রতিবেশী সবিনয় চন্দ্র দাস জানান, ভোরে বিকট শব্দে তাদের ঘুম ভাঙ্গে। এক পর্যায়ে ওই পরিবারের কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমাট বেধে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসরের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন। তিনি বলেন, দগ্ধরা একই পরিবারের পাঁচজন। তাদের ঘরে সিলিন্ডার বোতল ছাড়া অন্য কোন গ্যাস সংযোগ পাওয়া যায়নি।নিচতলায় ঘরটিতে রাতে দরজা-জানালা বন্ধ ছিল এবং সিলিন্ডারের লাইনের লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমে চেম্বার হয়ে অবস্থায় চুলা জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বাড়ির মালিকদের অবহেলা ও অসচেতনতার কারণে এ ধরনের ঘটনা কাঁচপুরে প্রায় ঘটছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
দগ্ধদের মধ্যে দুই শিশুসহ তিন জনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের মধ্যে মানব চৌধুরীর ৭০শতাংশ পুড়েছে। বাচা চৌধুরীর ৪৫ শতাংশ ও তাদের তিন সন্তান মৌরির ৩৬ শতাংশ, মুন্নির ২৮ শতাংশ ও তিন্নির শরীরের ২২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানিয়েছেন সোনারগাঁ থানার (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান। তিনি বলেন, গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুনে দগ্ধের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে কারো অবহেলা পাওয়া গেলে পুলিশ তদন্ত অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন